অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবকাঠামোর কারণে প্রতিবছর বসতভিটা, ফসল ও সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাওড় ও উপকূলবাসীর অনেকে।
বিশ্বজুড়ে উপকূল বেষ্টিত দেশগুলো জলবায়ুর কারণে দুর্যোগে বরাদ্দ রাখে জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশ এ খাতে চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ জুটেছে শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকূলে এই মুহূর্তে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কিলোমিটার টেকসই বাঁধ প্রয়োজন। সব বাঁধ আগামী ১০ বছরের মধ্যে নির্মাণ করতে হলে প্রয়োজন প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ঢাকা শহরের মানুষ রাস্তায় থাকলেও তাকে পানি খেতে হবে। স্যানিটেশনে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। আমরা এবার ১০টা কথা বলবো না। শুধু দুটি কথা- এক. বিশুদ্ধ পানির বন্দোবস্তর জন্য অ্যালোকেশন দেন। দুই. সব বাঁধ আমরা একদিনে করতে পারবো না। পাথরের বাঁধ নির্মাণে অন্তত প্রতি বছর ১২ হাজার কোটি টাকা অ্যালোকেশন দেন।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হাওড়াঞ্চলও। কিন্তু স্থানীয়দের সমন্বয়ে উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মাণ না হওয়ায় স্থায়ী উপকারে আসছে সরকারের কোনো খরচ।
আরও পড়ুন: তেঁতুলিয়ার ভাঙনরোধে নদীপাড়ে মানববন্ধন
পরিবেশ ও হাওড় উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, ‘প্রান্তিক এলাকার জনগোষ্ঠী উপকৃত হচ্ছে না। আমরা অর্থনীতির ভাষায় অনেক সময় এটাকে বলি ফেইস-পাউডার ইকোনমি। আমরা রাজধানীসহ বড় বড় শহরগুলোকে শুধুমাত্র মেকাপের মতন উন্নতি করছি। কিন্তু মূল যে জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন, মানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কিন্তু উপকৃত হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত বাজেট হওয়া উচিত জনবান্ধব। মানুষের কাছে গিয়ে জানতে হবে, আসলে তাদের কি প্রয়োজন।’
আসন্ন বাজেটে জিডিপির কমপক্ষে ৩ শতাংশ অর্থ পরিবেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু খাতে বরাদ্দ রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘একটি আইডিয়াল সিচুয়েশন যদি আমরা বলি, টোটাল জিডিপির ৩ শতাংশ জলবায়ু পরিকল্পনার জন্য বরাদ্দ রাখা উচিত।’
প্রতি অর্থবছরে বাংলাদেশের সার্বিক জলবায়ু অর্থায়নে ঘাটতি ২৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এজন্য বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থ জোগাড়ের পাশাপাশি দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর ৫ শতাংশ করারোপের তাগিদ খাত সংশ্লিষ্টদের।