বুধবার (২ জুলাই) নিজের অনুসারীদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় এই আধ্যাত্মিক নেতা আরও বলেন, শুধুমাত্র তার প্রতিষ্ঠিত গ্যাডেন ফোডরাং ট্রাস্ট তার উত্তরসূরি নিয়োগ করতে পারবে। এ বিষয়ে আর কারও হস্তক্ষেপ করার অধিকার বা কর্তৃত্ব নেই।
তিব্বতীয় ঐতিহ্য ও ধর্মবিশ্বাস মতে, দালাই লামারা তাদের মৃত্যুর পর ‘পুনর্জন্মপ্রাপ্ত’ হন। ১৯৫০-এর দশকে চীন তিব্বতকে নিজেদের ভূখণ্ডের সাথে একীভূত করার পর থেকে বর্তমান দালাই লামা ভারতে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। ফলে উত্তরাধিকার নির্বাচন একটা অত্যন্ত বিতর্কিত বিষয় হয়ে উঠেছে।
এদিকে বেইজিং এরই মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতি দালাই লামার এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তার উত্তরসূরি চীনের ভেতর থেকে হবেন এবং তাকে অবশ্যই সরকারের অনুমোদন নিতে হবে।
ভারতের ধর্মশালা শহরে দালাই লামা যেখানে বাস করেন, সেখানে বহু প্রতীক্ষিত ঘোষণাটি শুনতে বুধবার তার সারা বিশ্ব থেকে শত শত অনুসারী জড়ো হন। দালাই লামা লাইব্রেরি এবং আর্কাইভ সেন্টারে দালাই লামার ভিডিও বার্তাটি সম্প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে সহকারী কমিশনারসহ নিহত ৫
বার্তায় দালাই লামার ভাষ্য, ‘আমি নিশ্চিত করছি যে, দালাই লামার প্রতিষ্ঠান অব্যাহত থাকবে। আরও একবার ব্যক্ত করেন, ‘ তার কার্যালয় গ্যাডেন ফোডরাং ট্রাস্ট অতীত ঐতিহ্য অনুসারে উত্তরসূরি অনুসন্ধান ও স্বীকৃতির প্রক্রিয়াগুলো পরিচালনা করবে।’
ধর্মশালা দালাই লামার ৯০তম জন্মদিন উদযাপন করছে যা গত সোমবার (৩০ জুন) থেকে শুরু হয়েছে। তিব্বতী চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে এটা তার জন্মদিন। জন্মদিনের উদযাপন চলবে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত যেটা তার সরকারি জন্মদিন।
এই উদযাপনে ৭ হাজারেরও বেশি অতিথি উপস্থিত থাকছেন, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন ভারতীয় মন্ত্রীও রয়েছেন। দালাই লামার দীর্ঘদিনের অনুসারী হলিউড অভিনেতা রিচার্ড গিয়ারও অংশ নিচ্ছেন।
নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের আধ্যাত্মিক প্রধান তার দালাই লামা পদ অব্যাহত রাখবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি বলেছিলেন, তার উত্তরসূরি একজন মেয়ে হতে পারেন, অথবা কোনো উত্তরসূরি নাও থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: অস্ত্রের লাইসেন্স চান পাকিস্তানের সংসদ সদস্যরা
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি আবার বলেন, যদি নির্বাসিত তিব্বতীদের মধ্যে এই পদের জন্য ব্যাপক সমর্থন থাকে, তাহলে তা অব্যাহত থাকবে এবং তার অফিস একজন উত্তরসূরী নির্বাচন করবে। তিনি সর্বদা জোর দিয়ে বলে এসেছেন, তার উত্তরসূরিকে চীনের বাইরে জন্মগ্রহণ করতে হবে। তাই স্বাভাবিকভাবে বুধবার তার ঘোষণা বেইজিং ভালোভাবে নেয়নি।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, দালাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন অবশ্যই চীনা আইন ও বিধিমালার পাশাপাশি ‘ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং ঐতিহাসিক রীতিনীতি’ মেনে হতে হবে এবং বেইজিংয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
]]>