উজানের পানি বাড়ছে হাওড়ে, সবজি তুলে ফেলছেন চাষিরা

৪ সপ্তাহ আগে
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে গেছে। শীতকালীন সবজি ক্ষেতগুলো এতদিন শুকনো থাকলেও বৃহস্পতিবার(৫ জুন) সকাল থেকে পানি বেড়ে সবজি ক্ষেতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে সবজি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

 নিম্নাঞ্চলের সড়ক ডুবে যাওয়ায় দুভোগে পড়েছে সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ও লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের ইসলামপুর গোয়াচূড়া দরিয়াবাজ ইচাগরি আলমপুরসহ ৮ গ্রামের মানুষ। 


এদিকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নে সুরমা নদীর পানি গজারিয়া খাল দিয়ে খরচার হাওড়ে ঢোকায় শীতকালীন সবজি ক্ষেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আরও পানি বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কায় তারা দ্রুত ক্ষেত থেকে সবজি তুলছেন। 


বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাদেরটেক গ্রামের সবজি চাষি মো. কালাচান মিয়া জানান, তিনি ৫ বিঘা জমিতে শসা, লাউ ও শিম, ডাটা, মরিচসহ বিভিন্ন জাতের শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। কাঁচামরিচ ছাড়া সব সবজি তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন। কিন্তু রসুলপুর এলাকার গজারিয়া খালের পাশের জমিতে মরিচ আবাদ করেছিলেন। শীতের সময় কাঁচামরিচ বিক্রি করেছেন। কিন্তু ক্ষেত থেকে এক মাস কাঁচামরিচ তুলে বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু সকালে মরিচ গাছের গোড়ায় ঢলের পানিতে জলাবদ্ধতার কারণে গাছগুলো মারা যাবে। তাই গাছ থেকে মরিচ সংগ্রহ করছেন। 

আরও পড়ুন: স্রোতে ভেসে গেছে ঘর, ৪ পরিবারের ঈদ কাটবে পরের বাড়িতে!

একই গ্রামের সবজি চাষি জামাল হোসেন জানান, গেল কয়েকদিন গজারিয়া খালে পানি প্রবাহ ছিল না। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সুরমা নদীর পানি বেড়ে গজারিয়া খাল দিয়ে খরচার হাওড়ে ঢুকছে। এতে হাওড়ে পানি বাড়বে। 


বাঘবেড় গ্রামের ইউনুস আলী বলেন, গেল কয়েকদিন বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল নদীতে প্রবাহিত হলেও আজ থেকে সিলেটের পানি সুরমা নদী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর স্রোত অনেক বেড়েছে। প্রবল বেগে সুরমা নদীর পানি খালবিল দিয়ে বিভিন্ন হাওড়ে ঢুকেছে। 


সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আব্দুল খালেক বলেন, ‘চেখনিখাড়া ও গোয়াচূড়া সড়কে দুইদিন আগেও যানবাহন চলাচল করছে। আজ সকালে ইসলামপুর এলাকা থেকে সড়কের নিচু অংশ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে লক্ষ্মণশ্রী ও মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ইসলামপুর, গুয়াচূড়া রোউয়ারপাড়, ইছাগড়িসহ দুটি ইউনিয়নের ৮টি গ্রামের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তারা নৌকা যাতায়াত করছেন। 


রুহেনা আক্তার বলেন, চেখনিখাড়া সড়ক বছরের ৬ মাস পানিতে তলিয়ে থাকে, তখন মানুষ নৌকায় চলাচল করেন। গতকালও সড়কের নিচু অংশে পানিতে তলিয়ে যায়। 

আরও পড়ুন: ইলিশের মতো দেশীয় মাছেও প্রজনন সুরক্ষা, হাওড়ে বন্ধ মাছ ধরা

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সুরমা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে খালবিল দিয়ে হাওড়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে শনির হাওড়, মাটিয়ান হাওড়, দেখার হাওড়, কালিয়াকোটা হাওড়, ছায়ার হাওড়, বরাম হাওড়সহ ছোট বড় ১৩৭টি  হাওড়ে পানির পানির স্তর বেড়েছে। নিচু এলাকায় বসবাসকারী লোকজন এখন নৌকা ব্যবহার করে শহরে যাতায়াত করছেন। সকালে সুরমা নদীর পানি বাড়লেও বিকেলে পানি প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে।  


সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে সুরমা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং বিকেলের দিকে কিছু কমে। এখন উজানে বৃষ্টিপাত হয়নি, তাই এই পানি প্রবাহ দ্রুত কমছে। তবে হাওড়ে পানি প্রবাহ বেড়েছে। এখনও সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই বন্যার সম্ভাবনা আপাতত নেই।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন