ঈদে সড়কপথে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে রংপুর মেট্রোপলিটন যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি এবং মেট্রোপলিটন সড়ক নিরাপত্তা কমিটির যৌথ উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী, বিপিএম। আরও উপস্থিত ছিলেন সফিজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস), আরপিএমপি, মো. হাবিবুর রহমান, উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি), মো. আব্দুর রশিদ, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), এস. এম. মাহবুবুর রহমান, সহকারী পরিচালক, বিআরটিএ, মো. আনোয়ারুল হক, উপ-পরিচালক, ফায়ার সার্ভিস রংপুর, মো. জুলফিকার আলী, ম্যানেজার, বিআরটিসি বাস ডিপো, রংপুর, মো. আশিকুর রহমান আশিক, সাধারণ সম্পাদক, বাস মালিক সমিতি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা।
আরও পড়ুন: রংপুরে শিক্ষার্থী কমছে সরকারি স্কুলে, বাড়ছে বেসরকারিতে
সভায় উল্লেখ করা হয়, গত ঈদে রংপুর অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ৪৫ জন আহত হয়েছিলেন। এ প্রেক্ষাপটে এবারের ঈদ যাত্রা নিরাপদ ও দুর্ঘটনামুক্ত রাখতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মডার্ন মোড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসানো নিষিদ্ধ করা হবে। নির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত কোনো বাস দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।এক লাইনে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধে রেকারিং করা হবে।
মাহিগঞ্জ সাতমাথায় চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন পুলিশ কমিশনার। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ মডার্ন মোড়ে ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে তাদের কাউন্টার স্থাপনের অনুরোধ জানান।
নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা প্রতিটি বাস কাউন্টারের সামনে ঝুলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে বাস মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঈদে ঢাকামুখী ফাঁকা গাড়ি যাওয়ায় ভাড়া কিছুটা বাড়ে।
এছাড়া কোরবানির হাট রাস্তায় বসানো যাবে না এবং অতিরিক্ত হাসিল আদায় বন্ধ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের টাকা পরিবহনে পুলিশ নিরাপত্তা দেবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় থানাগুলোতে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন সরবরাহ করা হবে।
পকেটমার, মলম পার্টি শনাক্তকরণে স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়োগের নির্দেশ দেয়া হয় ইজারাদারদের। বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী হয়রানি বন্ধে পূর্ব মিটিং ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। সভায় বাসের সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিমি/ঘণ্টা নির্ধারণের আহ্বান জানানো হয়। ঈদের পূর্বে ও পরে জ্বালানি পাম্প খোলা রাখার অনুরোধ জানান সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: নানা সংকটের বেড়াজালে রংপুরের অধিকাংশ বিসিক শিল্পনগরী
আলোচনা শেষে পুলিশ কমিশনার সব অংশীজনকে আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ঈদযাত্রাকে নিরাপদ, স্বস্তিদায়ক ও নির্বিঘ্ন করার আহ্বান জানান। তিনি যানজট নিরসন, যাত্রী হয়রানি রোধ, বাস ভাড়া নিয়ন্ত্রণ এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রস্তুতি সম্পর্কে আশ্বাস দেন।
আলোচনা শেষে পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী সবাইকে আগাম ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।