ইয়েমেনে কি ভারতীয় নার্স প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড বাতিল হয়েছে?

৩ দিন আগে
দীর্ঘ কূটনৈতিক ও আইনি যুদ্ধের পর শোনা যাচ্ছিল ইয়েমেনে খারিজ হয়ে গেছে ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড। ভারতীয় মুসলিম ধর্মগুরু কান্দাপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ার দফতর এই দাবি করে বলে উল্লেখ করা হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। তবে সেই তথ্য ভুল বলে জানা যাচ্ছে।

ভারতের সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড বাতিলের যে দাবি করা হচ্ছে তা ‘ভুয়া’। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। 

 

গেল সোমবার সকালে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে আবুবকরের দফতর জানায়, গত ১৬ জুলাই মৃত্যুদণ্ড পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল নিমিশা প্রিয়ার। এবার সেই সাজা পুরোপুরি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ইয়েমেনের রাজধানী সানায় দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা খারিজ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। 

 

যদিও মুসলিয়ার দফতর এটাও জানিয়েছে, ইয়েমেন বা ভারত সরকারের তরফে এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো দেয়া হয়নি। খবর সংবাদ প্রতিদিনের। 

 

আরও পড়ুন: ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ড /১০ লাখ ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় নার্স প্রিয়াকে বাঁচানোর চেষ্টা!

 

ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, কূটনৈতিক পথ কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিমিশার মৃত্যুদণ্ড ঠেকানোর একমাত্র উপায় ‘ব্লাড মানি’। তবে তাতে রাজি হয়নি ভুক্তভোগীর পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে কেরালার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়াকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন এপি আবুবকর মুসলিয়ার। ইয়েমেনের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন তিনি। 

 

যদিও ‘রক্তের দাম’ নিতে শুরু থেকেই নারাজ ছিলেন মৃত তালাল মাহদির ভাই আবদুল মাহদি। এই পরিস্থিতির মাঝেই মুসলিয়ার দফতরের দাবি শোরগোল ফেলে দেয় ভারতে। এরপরই সরকারি সূত্রের দাবি করে সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর তরফে জানানো হয়, ইয়েমেনে নিমিশার মৃত্যুদণ্ড খারিজ করার যে দাবি করা হচ্ছে তা পুরোপুরি ভুল।

 

এনডিটিভির তথ্য মতে, ২০০৮ সালে ইয়েমেনে যান প্রিয়া। বেশ কয়েকটি হাসপাতালে কাজ করার পর নিজেই ক্লিনিক চালু করেন তিনি। ২০১৪ সালে তালাল আবদো মাহদি নামে স্থানীয় একজনের সাথে যোগাযোগ করেন ভারতীয় ওই নারী, কারণ ইয়েমেনের নিয়ম অনুসারে, ব্যবসা শুরু করার জন্য স্থানীয় কারও সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাধ্যতামূলক।

 

জানা যায়, কেরালার ওই নার্সের সাথে মাহদির বিরোধ হয় এবং তিনি ওই ইয়েমেনির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ২০১৬ সালে মাহদিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। কিন্তু এরপরও মাহদি ভারতীয় ওই নার্সকে হুমকি দেয়া অব্যাহত রাখেন বলে অভিযোগ। 

 

নিমিশার পরিবারের দাবি, নিজের জব্দ থাকা পাসপোর্ট উদ্ধারের জন্য মাহদির শরীরে ঘুমের ওষুধের ইনজেকশন দিয়েছিলেন প্রিয়া। তবে অতিরিক্ত মাত্রার কারণে মাহদির মৃত্যু হয়। পরে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করার সময় প্রিয়াকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০১৮ সালে তাকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। 

 

আরও পড়ুন: ভারতীয় নার্সকে যে কারণে ফাঁসিতে ঝোলাচ্ছে ইয়েমেন

 

বিচারিক আদালত প্রিয়াকে একজন ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে, যা ২০২৩ সালের নভেম্বরে বহাল রাখে দেশটির সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন