প্রথমে ৪ সেপ্টেম্বর মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রস্তুতিজনিত কারণে তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়। শুরুতে কিছুটা ধীরগতি থাকলেও দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠেছে মেলা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে দুই চত্বরে সহস্রাধিক দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ।
অন্যদিনগুলোতে রোদ-বৃষ্টির মিশ্রণে মেলার দিনযাপন কাটলেও আজকের দিনটি ছিল ভিন্নতর। প্রখর রৌদ্র সত্ত্বেও দর্শনার্থীদের ভিড়ে উপচে পড়েছে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। প্রকাশক থেকে শুরু করে ক্রেতা, সবাইকে দেখা গেছে বইয়ের প্রতি গভীর আগ্রহে মগ্ন থাকতে। এতে স্পষ্ট হয়েছে, বই এখনো বাংলার মানুষের হৃদয়ে অনুপ্রেরণা, জ্ঞানের আলো আর আনন্দের সঙ্গী হয়ে আছে।
এবারের মেলায় ২০৩টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্টলসহ দেশের স্বনামধন্য ইসলামি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিচ্ছে। সেই সঙ্গে মিশর, লেবানন ও পাকিস্তানের প্রকাশকগণও যুক্ত হয়েছেন এ আয়োজনে। ফলে আন্তর্জাতিক মাত্রা পেয়েছে এবারের মেলা। দর্শনার্থীরা কোরআন-হাদিস, তাফসির-ফিকহ, ইসলামি ইতিহাস, শিশুতোষ বই থেকে শুরু করে আধুনিক ইসলামি সাহিত্য সবই পাচ্ছেন এক জায়গায়।
আরও পড়ুন: নবীজির প্রিয় ও পছন্দের বিষয়গুলো নিয়ে সিরাতের বই ‘নবীজির প্রিয় ১০০’
প্রতিদিনের মতো মঞ্চে থাকছে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, কুইজ প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা এবং কবিতা পাঠ। বিশেষ করে এই সপ্তাহের বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে বাড়তি আয়োজন, নাশিদ সন্ধ্যা এবং বিশেষ কুইজ প্রতিযোগিতা। কুইজে বিজয়ীদের জন্য থাকবে বই ও চমকপ্রদ উপহারসামগ্রী। নাশিদ সন্ধ্যায় অংশ নেবেন দেশের খ্যাতিমান নাশিদ শিল্পীরা, যা মেলার পরিবেশকে করবে আরও প্রাণবন্ত।
আজকের বইমেলায় দর্শনার্থীদের বাড়তি উচ্ছ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন প্রখ্যাত আলেম আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী এবং প্রিয় সাহিত্যিক মুহাম্মদ যাইনুল আবেদীন সাহেব। তাদের আগমন মেলায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে, পাঠকরা তাদের ঘিরে ভিড় করেছেন। দর্শনার্থীদের মতে, লেখক ও আলেমরা যখন সরাসরি মেলায় আসেন, তখন মেলাটি প্রকৃত অর্থেই প্রাণ ফিরে পায়।
প্রকাশক আবদুল কাদের খান বলেন, প্রথমদিকে দর্শনার্থী ও ক্রেতা কিছুটা কমই এসেছিল। কিন্তু আজ ছুটির দিনে সকাল থেকেই বিক্রি ভালো হয়েছে। মেলা ধীরে ধীরে জমে উঠছে।
রাহনুমা প্রকাশনীর মাহমুদুল হাসান তুষার জানান, ‘আমরা গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ স্টল নিয়ে মেলার আয়োজন করেছি। এবার চার দেশের প্রকাশনী যুক্ত হয়েছে। আমাদের স্বপ্ন আরও বড়।’
মেলা উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্টলসহ বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ৪০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড়ে বই বিক্রি করছে। ফলে পাঠকরা পছন্দের বই কম দামে সংগ্রহ করতে পারছেন। এছাড়াও মেলা উপলক্ষ্যে জনপ্রিয় অনলাইন বুকশপ রকমারিও ১০০টাকার কুপন দিচ্ছে ফ্রি।
]]>