ইসরাইলের কাছে ‘কিছু বার্তা’ পৌঁছে দিতে সাইপ্রাসকে অনুরোধ করেছে ইরান

৩ সপ্তাহ আগে
চলমান হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে ইসরাইলের কাছে কিছু বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাইপ্রাসকে অনুরোধ করেছে ইরান।

রোববার (১৫ জুন) সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডুলিদিস এই তথ্য জানিয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।


সাইপ্রাস প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ইরান তাকে অনুরোধ করেছে যেন তিনি ইসরায়েলের কাছে “কিছু বার্তা” পৌঁছে দেন।


আজই তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।


তবে ইরান কী বার্তা দিয়েছে সে বিষয়ে ক্রিস্টোডুলিদিস বিস্তারিত কিছু বলেননি। তবে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংকটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে যে প্রতিক্রিয়া দেখা হচ্ছে তাকে “ধীর গতির” বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।


তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে কাছের ইইউ সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে সাইপ্রাস ইইউ পররাষ্ট্রবিষয়ক পরিষদে একটি জরুরি বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছে।

 

এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবাস আরাগচি বলেছেন, “ইসরাইল যদি ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ করে, তবে আমাদের হামলাও শেষ হবে।”


বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, “আমরা আত্মরক্ষা করছি; আমাদের প্রতিরক্ষা পুরোপুরি বৈধ। এই প্রতিরক্ষা হলো আগ্রাসনের জবাব। যদি আগ্রাসন বন্ধ হয়, স্বাভাবিকভাবেই আমাদের প্রতিক্রিয়াও বন্ধ হবে।”


তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে হামলা বন্ধের কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। ইসরাইলি নেতারা বরং ইরানে আরও ভয়াবহ হামলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

 

আরও পড়ুন: হরমুজ প্রণালী কি বন্ধ করবে ইরান, কী প্রভাব পড়বে?

 

এদিকে শনিবারও (১৪ জুন) তৃতীয় দিনের মতো ইরানজুড়ে বেসামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে বোমা হামলা চালায় ইসরাইল। এ হামলায় তেহরানের শাহরান তেল স্থাপনায় আগুন লাগে। জবাবে রাতে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।


আল জাজিরা জানিয়েছে, ইরানি হামলার জেরে পুরো ইসরাইলে সাইরেন বেজে উঠে। জেরুজালেম ও হাইফা শহরের আকাশেও ক্ষেপণাস্ত্র দেখা যায়। বাসিন্দাদের সুরক্ষিত স্থানে যেতে বলে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। 
 

গণমাধ্যমের রিপোর্ট মতে, তেল আবিব ও এর আশপাশের এলাকাকে লক্ষ্য করে কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এর মধ্যে কয়েক ডজন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। যার বেশিরভাগই ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।
 

ইসরাইলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব লক্ষ্য করে সর্বশেষ ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত সাতজন ইসরাইলি সেটেলার (অবৈধ বসতি স্থাপনকারী) নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে এদিন ইরানি হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন।
 

আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে ৭৪ জন আহত হয়েছেন বাত ইয়াম এলাকায়, যার মধ্যে তিনজন গুরুতর, পাঁচজন মাঝারি এবং ৬৬ জন হালকা। রেহোবত এলাকায় ২৮ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুইজন গুরুতর, সাতজন মাঝারি এবং ১৯ জন হালকা।

 

আরও পড়ুন: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো কোথায়, হামলা হয়েছে কোনগুলোতে?
 

ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার দৃশ্য ওই ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরে পড়েছে।
 

ইসরাইলি মিডিয়া আরও জানিয়েছে, ইনস্টিটিউটের এমন একটি ভবনে আগুন লেগেছে যেখানে বেশ কয়েকটি গবেষণাগার রয়েছে। আগুনের ফলে ভবনের ভেতরে অনেক মানুষ আটকা পড়েছে। 
 

পরমাণু ইস্যুতে ওয়াশিংটন-তেহরান আলোচনার মধ্যে বিনা উসকানিতে গত শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানজুড়ে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। সেই হামলা এখনও অব্যাহত রয়েছে। যার পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইরানি সামরিক বাহিনী।


ইসরাইলের হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত দুই দিনে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত এবং ৮০০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২০ জনই শিশু।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন