ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন ভূমির দাবির প্রতি এবার একাত্মতা প্রকাশ করেছেন আইরিশ মিক্সড মার্শালআর্ট (এমএমএ) ফাইটার প্যাডি ম্যাককোরি। গত শনিবার (৩১ মে) ইতালির রোমে ইসরাইলি প্রতিপক্ষকে হারানোর পর চিৎকার করে 'ফ্রি প্যালেস্টাইন' স্লোগানের মাধ্যমে গাজাবসীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এই আইরিশ ফাইটার।
২৭ বছর বয়সী ম্যাককরি রোমে অনুষ্ঠিত 'কেজ ওয়ারিয়র ১৮৯' ইভেন্টে ইসরাইলের শাওকি ফারাজের বিপক্ষে বিচারকদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বিজয়ী হন। লড়াইয়ের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ম্যাককোরিকে প্রতিপক্ষ ফারাজের বিপক্ষে বেশি শক্তিশালী অবস্থানে দেখা গেছে, যেখানে এই আইরিশকে বেশ কয়েকবার ইসরাইলি প্রতিপক্ষকে মারছিলেন।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ফারাজ এক সময় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের সদস্য ছিলেন। গণমাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরাইলি আর্মির সাবেক সদস্য ফারাজকে ফাইটিং কেজের মেঝেতে ফেলে এই আইরিশ ফাইটার পেটাচ্ছেন এবং তার মুখের কাছে চিৎকার করে মুক্ত ফিলিস্তিনের দাবিতে 'ফ্রি প্যালেস্টাইন' স্লোগান দিচ্ছেন। তার স্লোগানে উৎসাহিত হয়ে আগত দর্শকরাও স্লোগান ধরে।
আরও পড়ুন: বরাদ্দ বেড়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে
লড়াইয়ের পর ম্যাককোরি একটি ভিডিও এক্সে তার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন, যেখানে ক্যাপশনে লিখেছেন, 'স্ট্রিট জাস্টিস' (এমন একটি বিচার প্রক্রিয়া বোঝায় যেখানে জনগণ বা জনতা নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়ে অপরাধী বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে)। সেই সঙ্গে আয়ারল্যান্ড ও ফিলিস্তিনের পতাকাও শেয়ার করেন।
ম্যাককোরি ম্যাচ শেষে এবং রেফারি তাকে বিজয়ী ঘোষণা করার সময় নিজেকে ফিলিস্তিনের পতাকা দিয়ে আচ্ছাদিত করেছিলেন। বিজয়ী ঘোষণা করার সময় আবারও "ফ্রি প্যালেস্টাইন" স্লোগান দেন তিনি।
ম্যাককোরির ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি আদতে দেশটির প্রতি আইরিশদের ধারাবাহিক সমর্থনেরই প্রতিফলন। গত সপ্তাহে, আয়ারল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস জোর দিয়ে বলেছেন যে, তার সরকার গাজার ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গণহত্যার অভিযোগে একটি বিবৃতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে—যা আয়ারল্যান্ডকে প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
এই পদক্ষেপের পর, ইসরায়েল আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অবস্থিত দূতাবাস বন্ধ করে দেয় এবং আয়ারল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিসকে 'অ্যান্টিসেমিটিক' বলে অভিহিত করে। তবে, আয়ারল্যান্ডের সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। আয়ারল্যান্ডের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের প্রতি সমালোচনার ঝড় তুলেছে এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানাতে আরও বেশি দেশকে উদ্বুদ্ধ করেছে।