ইসকনবিরোধী শান্তিপূর্ণ মিছিলকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলায় প্রতিবাদ

১ সপ্তাহে আগে
রাজধানীর উত্তরায় ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত মিছিলকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয় ছাত্রজনতা ও আলেম সমাজ। একই সঙ্গে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ইসকনপন্থীদের মুখোশ উন্মোচনসহ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন স্থানীয়রা।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানী উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত মুগ্ধ মঞ্চে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

 

বক্তারা জানান, গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর ‘ইসকন কর্তৃক দেশব্যাপী সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এবং ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধকরণের দাবিতে’ সাধারণ ছাত্রজনতার ব্যানারে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের খালপাড় পুলিশ বক্সের সামনে থেকে ১১ নম্বর সেক্টর চৌরাস্তা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়।

 

এ সময় মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী নামে এক মুসল্লি শুটিংয়ে ব্যবহৃত ডামি রাইফেল নিয়ে প্রবেশ করলে ওই ঘটনাকে ইস্যুতে পরিণত করে পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তুরাগ থানায় মামলা করা হয়। যা পতিত ফ্যাসিবাদী কায়দায় গভীর ষড়যন্ত্র ও হয়রানির নামান্তর বলেই দাবি করেন বক্তারা।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তুরাগ থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র সরদার রিয়াদ জানান, এ ঘটনায় তুরাগ থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিতসহ জনমনে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টির যে অভিযোগ এবং অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার যে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটা ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার নীলনকশা বলে আমরা মনে করছি।

 

আরও পড়ুন: টঙ্গীতে নিখোঁজ ইমাম শিকলবন্দি অবস্থায় পঞ্চগড়ে উদ্ধার, কী ঘটেছিল তার সঙ্গে?


বক্তারা বলেন, সেদিন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে গণমানুষের মূল মিছিলের বিষয়টি আড়াল করে কর্মসূচিতে ডামি রাইফেল নিয়ে হঠাৎ ঢুকে পড়া ওই ব্যক্তির ১৫-২০ সেকেন্ডের বিষয়টিকে ‘ছাত্রদের আগ্রাসন: উত্তরায় ধর্মীয় আন্দোলন’ শিরোনামে স্যোশাল মিডিয়ায় নেতিবাচকভাবে প্রচার করেছে একটি মহল। যা চরম বিভ্রান্তিকর, ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি ও সাধারণ মানুষকে ভুল তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: টঙ্গীর সেই ইমামকে নিয়ে জিএমপির বিবৃতি

 

সংবাদ সম্মেলনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আখ্যা দেয়ায় জড়িত ইসকনপন্থি দালালদের চিহ্নিতকরণ, তুরাগ থানায় দায়ের করা মিথ্যা-বানোয়াট মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার, বিভ্রান্তিকর তথ্য স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে প্রশাসনের হয়রানি বা ভীতিপ্রদর্শনের পুনরাবৃত্তিরোধসহ মোট ৪ দফা দাবি জানানো হয়।

 

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়ন ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা। অন্যথায় স্থানীয় ছাত্রজনতা ও আলেম সমাজের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উত্তরার আলেম সমাজের প্রতিনিধি মুফতি কামালুদ্দীন, মুফতি নেয়ামতুল্লাহ আমিন, মুফতি সুহাইল সাদী, তুরাগ থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক নুর মোহাম্মদ, নাবিল মাহমুদ, ইকবাল হোসেন, নাহিদ ইসলামসহ জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অনেকে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন