ইরানে হামলার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে যা বললেন ট্রাম্প

২ সপ্তাহ আগে
ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বোমারু বিমান দিয়ে বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামলার বিষয়টি জানান। ইরানও তিন স্থাপনায় বিস্ফোরণ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ইরানে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নিরাপদ স্থানে পৌঁছার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) রাত ১০টায় দেওয়া ওই ভাষণে ট্রাম্প যা বলেছেন, সময় সংবাদের পাঠকদের জন্য বাংলায় তা হুবহু তুলে ধরা হলো।


‘ধন্যবাদ। কিছুক্ষণ আগে, মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা, ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহানে বড় আকারে নিখুঁত হামলা চালিয়েছে। সবাই বছরের বছর ধরে এই ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক স্থাপনাগুলোর নাম শুনে আসছেন। আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা বিশ্বের এক নম্বর রাষ্ট্রে পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা।

No description available.হামলা মনিটরিং করার সময় ট্রাম্প। ছবি: হোয়াইট হাউস


আজ রাতে বিশ্বকে জানাতে পারি যে হামলাগুলো বিশাল সামরিক সাফল্য পেয়েছে। ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে এবং সার্বিকভাবে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের মাস্তান ইরানকে এখন শান্তি স্থাপন করতে হবে। যদি তারা তা না করে, তাহলে ভবিষ্যতের আক্রমণ অনেক বড় এবং অনেক সহজ হবে।


আরও পড়ুন: ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানালেন নেতানিয়াহু


আমেরিকার মৃত্যু ও ইসরায়েলের মৃত্যুর কথা ইরান গত ৪০ বছর ধরে বলে আসছে। তারা আমাদের জনগণকে হত্যা করছে, হাত উড়িয়ে দিচ্ছে, রাস্তার পাশে বোমা মেরে পা উড়িয়ে দিচ্ছে- এটাই ছিল তাদের বিশেষত্ব। আমরা এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হারিয়েছি। মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ তাদের ঘৃণার ফলস্বরূপ মারা গেছে। বিশেষ করে তাদের জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হাতে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে।


আমি অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমি এটা হতে দেব না। এটা আর চলবে না। আমি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাতে চাই। আমরা একটি দল হিসেবে কাজ করেছি, যা সম্ভবত আগে কখনও কোনো দল করেনি, এবং আমরা ইসরায়েলের জন্য এই ভয়াবহ হুমকি মুছে ফেলার জন্য অনেক দূর এগিয়েছি।
 

No description available.গ্রাফিক্স: আল জাজিরা


আমি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে তাদের অসাধারণ কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আমি সেই মহান আমেরিকান দেশপ্রেমিকদের অভিনন্দন জানাতে চাই যারা আজ রাতে এই দুর্দান্ত মেশিনগুলো (বিমান) উড়িয়েছেন, এবং সমস্ত মার্কিন সামরিক বাহিনীকে এমন একটি অভিযানের জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই, যা বিশ্ব বহু দশক ধরে দেখেনি। আশা করি, আমাদের আর আক্রমণের প্রয়োজন হবে না। আমি আশা করি তাই হবে।


আরও পড়ুন: ইরানের হামলার আশঙ্কায় আকাশসীমা বন্ধ করলো ইসরাইল


আমি জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান ‘রাজিন’ কেইন এবং এই আক্রমণে জড়িত সামরিক সব প্রতিভাবানকে অভিনন্দন জানাতে চাই।


যা যা বললাম, তা এখানেই শেষ। হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য গত আট দিনে আমরা যা দেখেছি তার চেয়ে অনেক বড় ট্র্যাজেডি হবে। মনে রাখবেন, এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। আজ রাতের আক্রমণ ছিল সবচেয়ে কঠিন, এবং সম্ভবত সবচেয়ে মারাত্মক, কিন্তু যদি শান্তি দ্রুত না আসে, তাহলে আমরা নির্ভুলতা, দ্রুততা এবং দক্ষতার সঙ্গে অন্য লক্ষ্যবস্তুগুলোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ব। বেশিরভাগই কয়েক মিনিটের মধ্যে ধ্বংস করা যেতে পারে।

No description available.ট্রাম্প বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ছবি: এপি


পৃথিবীতে এমন কোনো সেনাবাহিনী নেই যারা আজ রাতে আমরা যা করেছি তা করতে পারে, এমনকি কাছাকাছিও নয়। এমন কোনো সেনাবাহিনী কখনও ছিল না যারা কিছুক্ষণ আগে যা ঘটেছে তা করতে পারে।


আরও পড়ুন: ট্রাম্পের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে: ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী


আগামীকাল জেনারেল কেইন, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ সকাল ৮টায় পেন্টাগনে একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন। আমি সকলকে, বিশেষ করে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি শুধু বলতে চাই, ঈশ্বর, আমরা আপনাকে ভালোবাসি। আমরা আমাদের মহান সেনাবাহিনীকে ভালোবাসি। তাদের রক্ষা করেন। ঈশ্বর, মধ্যপ্রাচ্যের ওপর আশীর্বাদ করুন, ইসরায়েলের ওপর আশীর্বাদ করুন, এবং আমেরিকার ওপর আশীর্বাদ করুন।


আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন