রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনার ধাক্কায় বিশ্ব অর্থনীতি এমনিতেই দুর্বল। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন যুদ্ধ শেয়ারবাজার, ফরেন কারেন্সি মার্কেট ও ব্যবসায় বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে বিশ্বে সরবরাহ ঘাটতির কারণে তেলের দাম বাড়তে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়বে।
মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, হরমুজ প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন বিশ্বের ৩০-৪০ শতাংশ তেল পরিবহন হয়। এ রুটটা বন্ধ করে দিয়েছে বা দেবে, এতে সারা বিশ্বে তেলের সংকট পড়বে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এ জি এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, এ যুদ্ধের প্রভাবে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা পড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত প্রায় ৫০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারেন। এতে রেমিট্যান্স প্রবাহেও ভাটা পড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এ জি এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের একটা শ্রমবাজার আছে। সেখানে যদি সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের শ্রমবাজারে একটা প্রভাব পড়তে পারে। দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।’
আরও পড়ুন: ইসরাইলের হামলায় ইরানের শীর্ষ ১২ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত
এই যুদ্ধের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে ট্রাম্পনীতিকে দায়ী করছেন এ জি এম নিয়াজ উদ্দিন।
এ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু ইরানকে ষাট দিনের একটা আলটিমেটাম দিয়েছিলেন, সেই ষাট দিনের আলটিমেটামের শেষ পর্যায়ে এসে ইসরাইল ইরানে হামলা চালিয়েছে। আমেরিকাকে বলে-কয়েই তারা হামলা চালিয়েছে।
তবে এখনই বড় যুদ্ধের আশঙ্কা দেখছেন না আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক যুদ্ধের মধ্যে যাবে কি না, সেটা ইরানের ওপর নির্ভর করবে। ইরান কী ধরনের রেসপন্ড করবে। আমার মনে হয় না বেশিদূর যাবে। কারণ, সব দেশেরই চেষ্টা থাকবে এটা (যুদ্ধ) যেন তাড়াতাড়ি থামে।’
বিশ্ব শান্তি বজায় রাখতে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।