ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঁদ্রী সিবিহা নেটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আগামি সপ্তাহে ব্রাসেলস’এ অনুষ্ঠিতব্য নেটোর বৈঠকে কিয়েভকে সেই পশ্চিমি সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন বলে একটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার এই চিঠিটি দেখেছে।
২০২২ সালে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে যে যুদ্ধের সূচনা হয় তার পরিসমাপ্তির জন্য গত মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির রূপরেখায় যে “ বিজয় পরিকল্পনা” কথা ছিল, তারই অংশ হচ্ছে নেটোতে যোগ দেওয়ার জন্যে আমন্ত্রণ করতে এই চিঠিতে নতুন করে ইউক্রেনের চাপ।
ইউক্রেন বলছে যুদ্ধ শেষ না হওয়া অবধি তারা যে নেটোতে যোগ দিতে পারবে না সে কথা তারা বুঝে কিন্তু এখনই আমন্ত্রণ জানালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুঝতে পারবেন যে তিনি তাঁর অন্যতম মূল লক্ষ্য – কিয়েভকে নেটোর সদস্যপদ থেকে বিরত রাখা- সেটি অর্জন করতে পারবেন না।
সিবিহা বলেন, “ এই আমন্ত্রণকে উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে দেখা উচিত হবে না”।
তিনি লেখেন, “ বরঞ্চ পরিস্কার ভাবে এটা বোঝা দরকার যে নেটোতে ইউক্রেনের সদস্যতা অনিবার্য। এই অযৌক্তিক যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়া তার প্রধান যুক্তিগুলির একটি হারাবে। আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি ৩-৪ ডিসেম্বরের নেটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফলাফল হিসেবে এই জোটে যোগ দিতে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করতে”।
নেটোর কূটনীতিকরা বলছেন এই মূহুর্তে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে জোট সদস্যদের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়নি। এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নেটোর ৩২টি রাষ্ট্রের সবার সম্মতির প্রয়োজন পড়বে।
নেটো ঘোষণা করেছে যে ইউক্রেন জোটে যোগ দিবে এবং সেটার কোন হেরফের হবে না। তবে তারা কোন আনুষ্ঠনিক আমন্ত্রণপত্র পাঠায়নি এবং এ জন্য কোন সময়সীমাও নির্ধারিত করেনি।
নেটো বিষয়ক ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ওলগা স্টেফানিশিনা বলেন যে কিয়েভ বুঝতে পারছে যে নেটোতে যোগ দিতে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানোর বিষয়ে “এখনও” কোন ঐকমত্য হয়নি কিন্তু এই চিঠিটি পাঠনো হয়েছে কড়া রাজনৈতিক ইঙ্গিত হিসেবে।
তাঁর চিঠিতে সিবিহা যুক্তি দেখান , “ রাশিয়া যে যুদ্ধ শুরু করেছিল তা অব্যাহত ভাবে সে যে বাড়িয়ে চলেছে এবং তার সর্বসাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার হাজার হাজার সৈন্যকে সম্পৃক্ত করা এবং নতুন অস্ত্র প্রয়োগের জন্য ইউক্রেনকে পরীক্ষা ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা” তারই যথার্থ জবাব হবে এই আমন্ত্রণ।
সাম্প্রতিক দিনগুলিতে কূটনীতিকরা বলছেন যে তারা নেটো দেশগুলির মধ্যে অবস্থানের কোন পরিবর্তন দেখছেন না, বিশেষত এই জোটের প্রভাবশালী শক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিষয়ে, ঠিক যখন তারা নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন প্রশাসনের দিকে চেয়ে আছেন।