ইউ আকৃতির আসন: যেভাবে বদলে যাচ্ছে ভারতের শ্রেণিকক্ষের চিত্র

৩ দিন আগে
ভারতের কেরালা রাজ্যসহ বেশ কিছু রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে আসন বিন্যাসে একটি নীরব তবে গুরুত্বপূর্ণ বিপ্লব ঘটছে। আর তা হচ্ছে কেরালার চলচ্চিত্র পরিচালক বিনেশ বিশ্বনাথনের প্রথম সিনেমা ‘স্থানার্থী শ্রীকুট্টন’-এর প্রভাবে।

২০২৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল বিনেশ বিশ্বনাথনের প্রথম মালয়ালম চলচ্চিত্র 'স্থানার্থী শ্রীকুট্টন'। সিনেমটি ক্লাইম্যাক্সে দেখানো ‘সার্কুলার সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট’ (চক্রাকার আসনবিন্যাস), যেখানে পেছনের বেঞ্চ, সামনের বেঞ্চ বলে কিছু নেই, সেটাই বাস্তবায়িত হতে শুরু করেছে ভারতের বেশ কিছু রাজ্যের একাধিক স্কুলে।

 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শ্রেণিকক্ষে বসার ধরনে এক প্রকার অভিনব পরিবর্তনের প্রেরণা জুগিয়েছে মালয়ালম সিনেমাটি। ছবিটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কেরালা, তেলেঙ্গানা, তামিলানাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গসহ অনেক রাজ্যে একাধিক স্কুলে ইউ আকৃতির নতুন আসন ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।

 

জানা গেছে, স্থানার্থী শ্রীকুট্টন ছবির গল্প ঘোরে চারজন পড়াশোনায় অনাগ্রহী ও দুষ্ট প্রকৃতির শিক্ষার্থীর জীবনের ওপর। সিনেমার ক্লাইম্যাক্স দৃশ্য দেখে শিক্ষকেরা নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। এরপরই শুরু হয় শ্রেণীকক্ষের ভেতরে আসন বিন্যাসের বিপ্লব।

 

আরও পড়ুন: দুই ভাইয়ের সঙ্গে এক নারীর বিয়ে, নেপথ্যে ‘বিশেষ উদ্দেশ্য’

 

নতুন ব্যবস্থায় শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলো সাজানো হয়েছে অর্ধবৃত্তাকারে কিংবা ইংরেজি ইউ আকৃতিতে। ফলে শিক্ষকরা এখন প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রতিই সমান মনোযোগ দিতে পারছেন।

 

শিক্ষার্থীরাও আরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলোচনায় অংশ নিচ্ছে, যা তাদের শ্রবণ ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকরা।

 

নতুন এই ব্যবস্থা আসলেই কি পুনর্বিন্যাস শিক্ষা ও শেখার ধরনকে পরিবর্তন করতে পারে?

 

ভারতের ইংরেজি ভাষার দৈনিক সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথাগত ক্লাসরুমের আসন ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের আসনের সারি থাকে এবং শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষের সামনে বসেন। এই ব্যবস্থাপনায় পেছনের বেঞ্চে বসা শিক্ষার্থীরা সাধারণত কম মনোযোগী বা কম সক্রিয় বলে মনে করা হয়। এ ধারণাটি কেবল সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য নয়; গবেষণা থেকেও জানা গেছে যে, যেখানে ছাত্ররা বসে থাকে, তা তাদের অংশগ্রহণের পরিমাণ এবং মনোযোগের স্তরকে প্রভাবিত করে।

 

আরও পড়ুন: এক বছরের শিশুর কামড়ে কোবরা সাপের মৃত্যু!

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত এমন একটি দেশ যেখানে সামাজিক এবং শ্রেণিকক্ষের শ্রেণিভেদ প্রায়ই একে অপরকে প্রভাবিত করে, সেখানে আসন বিন্যাস আরও গভীর অসমতার জন্ম দিতে পারে। এ কারণে ইউ আকৃতির আসন ব্যবস্থা বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। এই ব্যবস্থায় সব শিক্ষার্থী একে অপরের শিক্ষক ও সহপাঠীদের কাছে সমানভাবে দৃশ্যমান থাকে।

 

ডেকান হেরাল্ড আরও জানিয়েছে, এই পদ্ধতি সহযোগিতামূলক শেখার সুবিধা তৈরি করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা একে অপরের কাছে বসে এবং একে অপরের সঙ্গে চোখের যোগাযোগ করতে পারে, তখন তারা একে অপরকে সাহায্য করতে, ধারণা বিনিময় করতে এবং একে অপরের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী হয়। এই ব্যবস্থা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক দূরত্ব কমিয়ে আনে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন