পুঁজিবাজারকে যে কোনো দেশের অর্থনীতির অন্যতম ভিত হিসেবে ধরা হলেও যেন এক ভিন্ন গল্প বাংলাদেশে। এখানে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকের উত্থান-পতনে বাড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ হারানোর হাহাকার। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে পুঁজির জন্য ব্যাংক নির্ভর হলেও শেয়ার বাজারমুখী হতে চায় না ভালো কোম্পানি।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি নেই। যা রয়েছে তার পরিমাণও অনেক কম।
আরও পড়ুন: এআই ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের বিএসইসির সতর্কবার্তা
এমন বাস্তবতায় সরকারের মালিকানা থাকা ইউনিলিভার, নোভার্টিস, সিনজেন্টা, নেসলে বাংলাদেশসহ ১০টি বহুজাতিক কোম্পানিকে সরাসরি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গত ১৪ আগস্ট শিল্প, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি বিভাগকে চিঠিও দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
খাত বিশ্লেষকরা বলছেন, বহুজাতিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতি-বিনিয়োগে। পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য অধ্যাপক আল আমিন বলেন, বহুজাতিক কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসলে সরকারের ঋণনির্ভরতা কমবে। বাড়বে বাজারের মানও।
আর সরকার শুধু নির্দেশ দিলেই কাজ হবে না, এজন্য দরকারি আইনের সংশোধনও করতে হবে বলে মনে করেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘এগুলো কোনো সরকারি কোম্পানি নয়। তাই সরকার থেকে নির্দেশ দেয়া হলে সেই নির্দেশ মানতে প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য- বিষয়টা এমন নয়। এখানে যারা মেজরিটি শেয়ারহোল্ডার, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে, তাদেরকে রাজি করাতে হবে। কারণ সরকার এখানে মাইনরিটি শেয়ারহোল্ডার। একটি মাইনরিটি শেয়ারহোল্ডার কখনোই মেজরিটি শেয়ারহোল্ডারকে সরাসরি কোনো নির্দেশ দিতে পারে না। এটি কার্যকর করতে হলে আইন প্রণয়ন করতে হবে যে সরকার নির্দেশ দিতে পারবে। তবে সেই আইনের বিধান এখনো নেই।’
এর আগেও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসার কয়েক দফা উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
]]>