আশুরা আরবি শব্দ। আশারা থেকে আশুরা শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ হচ্ছে দশ। আরবি সনের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখকে পবিত্র আশুরা বলা হয়।
আশুরার রোজা রাখার সঠিক নিয়ম হলো--
দুটি রোজা রাখতে হবে। মহররমের ১০ তারিখ রোববার (৬ জুলাই) একটি, আর এর আগে মহররমের ৯ তারিখ শনিবার (৫ জুলাই) অথবা পরের দিন মহররমের ১১ তারিখ সোমবার (৭ জুলাই) আরও একটি।
আরও পড়ুন: অবিবাহিত সাহাবিকে নবীজির উপদেশ
ইমাম বুখারি (রহ.) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করে মদিনায় পৌঁছে মদিনার ইহুদিদের আশুরার দিনে রোজা পালন করতে দেখেন।
নবীজি তাদের জিজ্ঞেস করেন, এ দিনে কী ঘটেছে যে তোমরা এতে রোজা পালন করো? তারা বলে, এই দিনটি অনেক বড় দিন, এ দিনে মহান আল্লাহ মুসা (আ.) ও তার সঙ্গীদের ফিরাউন থেকে মুক্ত করেছিলেন এবং ফিরাউন ও তার বাহিনীকে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মুসা (আ.) রোজা রাখতেন, তাই আমরাও আশুরার রোজা পালন করে থাকি। ইহুদিদের জবাব শুনে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুসা (আ.)-এর কৃতজ্ঞতার অনুসরণে আমরা তাদের চেয়ে বেশি যত্নশীল হওয়ার অধিকারী। অতঃপর তিনি নিজেও আশুরার রোজা রাখেন এবং মুসলমানদের তা পালন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। (বুখারি: ৩৩৯৭; মুসলিম: ১১৩৯)
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই রোজা নিজে পালন করেছেন এবং উম্মতকে রাখার প্রতি নির্দেশ করেছেন, তাই তার অনুসরণ করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, হে আল্লাহর রসুল, বিধর্মীরা তো এই দিনটিকে বড় দিন মনে করে। এই দিনে তারাও রোজা পালন করে। আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি তাহলে তো এদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে। তাদের প্রশ্নের জবাবে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারা যেহেতু এদিন একটি রোজা পালন করে, আগামী বছর ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করব, ইনশাআল্লাহ। (মুসলিম: ১১৩৪)
আরও পড়ুন: অমুসলিম ছেলেকে বিয়ে করা যাবে?
আরেক বর্ণনায় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো, তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সঙ্গে মিল না হওয়ার জন্য ১০ তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরও একটি রোজা রেখে নিও। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৪)
উপরোক্ত হাদিসের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, আশুরার রোজা দুটি রাখতে হবে। মহররমের ১০ তারিখ একটি, আর এর আগে মহররমের ৯ তারিখ অথবা পরের দিন মহররমের ১১ তারিখ আরও একটি।
]]>