রোববার (৬ জুলাই) দালাই লামার ৯০তম জন্মদিন। এই উপলক্ষ্যে শনিবার (৫ জুলাই) ভারতের হিমাচল রাজ্যের ধর্মশালা শহরে তার দীর্ঘজীবনের জন্য প্রার্থনা করতে ভক্ত ও অনুসারীরা এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই অনুষ্ঠানেই কথা বলছিলেন এই ধর্মগুরু।
হাজার হাজার অনুসারীর উপস্থিতিতে প্রার্থনায় নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি এবং অবলোকিতেশ্বরের [একজন বৌদ্ধ আধ্যাত্মিক রক্ষক] অব্যাহত আশীর্বাদে মানবতা এবং বৌদ্ধ ধর্মের সেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি আরও ৩০ বা ৪০ বছর বেঁচে থাকার আশা করি।’
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরেও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বয়স নিয়ে কথা বলেন দালাই লামা। সেখানে তিনি বলেছিলেন, তিনি ১১০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেন।
দালাই লামার ৯০তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে ধর্মশালায় গত সোমবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। তিব্বতী চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে এটা তার জন্মদিন। জন্মদিনের উদযাপন চলবে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত যেটা তার সরকারি জন্মদিন।
আরও পড়ুন: উত্তরসূরি নির্বাচনের ঘোষণা দালাই লামার, তীব্র প্রতিক্রিয়া চীনের
এই উদযাপনে ৭ হাজারেরও বেশি অতিথি উপস্থিত হয়েছেন, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন ভারতীয় মন্ত্রীও রয়েছেন। দালাই লামার দীর্ঘদিনের অনুসারী হলিউড অভিনেতা রিচার্ড গিয়ারও অংশ নিয়েছেন।
গত বুধবার নিজের উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন দালাই লামা। তিনি নিশ্চিত করেছেন, তার একজন উত্তরসূরি থাকবেন। এর মধ্যদিয়ে তার মৃত্যুর পর ৬০০ বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে কি না তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার এক প্রকার অবসান ঘটে।
এদিন নিজের অনুসারীদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় এই আধ্যাত্মিক নেতা আরও বলেন, শুধুমাত্র তার প্রতিষ্ঠিত গ্যাডেন ফোডরাং ট্রাস্ট তার উত্তরসূরি নিয়োগ করতে পারবে। এ বিষয়ে আর কারও হস্তক্ষেপ করার অধিকার বা কর্তৃত্ব নেই।
তিব্বতীয় ঐতিহ্য ও ধর্মবিশ্বাস মতে, দালাই লামারা তাদের মৃত্যুর পর ‘পুনর্জন্মপ্রাপ্ত’ হন। ১৯৫০-এর দশকে চীন তিব্বতকে নিজেদের ভূখণ্ডের সাথে একীভূত করার পর থেকে বর্তমান দালাই লামা ভারতে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। ফলে উত্তরাধিকার নির্বাচন একটা অত্যন্ত বিতর্কিত বিষয় হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: চীনে সন্তান জন্ম দিলেই মিলবে নগদ অর্থ, কত টাকা দেবে সরকার
বেইজিং এরই মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, দালাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন অবশ্যই চীনা আইন ও বিধিমালার পাশাপাশি ‘ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং ঐতিহাসিক রীতিনীতি’ মেনে হতে হবে এবং বেইজিংয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।