আবরাহা বাদশার বানানো উপসানালয় এখন ময়লার বাগার

৩ সপ্তাহ আগে
ইতিহাস সাক্ষী, আল্লাহর ঘর কাবার সমকক্ষ কিছুই হতে পারে না। যুগ যুগ ধরে আরববাসী কাবাকে কেন্দ্র করেই তাদের আধ্যাত্মিক জীবন সাজিয়ে নিয়েছে। অথচ ইয়েমেনের শাসক আব্রাহা বাদশাহ এক সময় কাবার বিকল্প বানানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর নির্মিত সেই উপসানালয় আজ ইতিহাসের করুণ সাক্ষী, এখন সেটি ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গায় পরিণত হয়েছে।

আব্রাহা মূলত আবিসিনিয়ার শাসকের অধীনস্থ ছিলেন। নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে তিনি নানা উপায়ে তাকে খুশি করার চেষ্টা করতেন। একদিকে দামি উপহার পাঠাতেন, অন্যদিকে এমন কিছু করার চিন্তা করলেন যা তার খ্রিস্টান শাসককে গভীরভাবে সন্তুষ্ট করবে।

 

অবশেষে আব্রাহা ইয়েমেনে এক বিশাল উপসানালয় বা গির্জা নির্মাণ করলেন। এত উঁচু ও জাঁকজমকপূর্ণ ছিল সেই স্থাপনাটি যে দূর থেকে তাকালে মানুষের টুপি পড়ে যেত। তার লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট, মক্কার কাবাকে কেন্দ্র করে যে হজ অনুষ্ঠিত হয়, তা বন্ধ করে দিয়ে লোকজনকে ইয়েমেনে টেনে আনা।

 

কিন্তু আব্রাহার স্বপ্ন ভেঙে যায়। আরবরা তাদের প্রাচীন ও পবিত্র কাবা ছেড়ে যেতে একেবারেই রাজি হয়নি। বিশেষ করে কুরাইশ গোত্র তো এই পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। একজন সাহসী কুরাইশ যুবক এমনকি আব্রাহার নতুন গির্জায় গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অপবিত্র করে দেয়।

 

আরও পড়ুন: ইনশাআল্লাহ ব্যবহারের নিয়ম

 

অপমান সহ্য করতে না পেরে আব্রাহা বিশাল হাতির বাহিনী নিয়ে মক্কার কাবা ধ্বংস করতে এগিয়ে আসেন। আরবরা আতঙ্কিত হয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানায়। তখনই ঘটে যায় ইতিহাসখ্যাত ঘটনা। কুরআনের সূরা ফিলে বর্ণিত সেই অলৌকিক কাহিনী, আল্লাহ পাঠালেন অসংখ্য পাখি, যারা পাথরের টুকরা নিক্ষেপ করে আব্রাহার সেনাদলকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়।

 

আব্রাহার গির্জা, যেটিকে তিনি কাবার বিকল্প বানাতে চেয়েছিলেন, তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রইল। সময়ের পরিক্রমায় সেটি একেবারেই গুরুত্ব হারায়। আজ সেখানে স্থানীয়রা ময়লা-আবর্জনা ফেলে। যেখান থেকে তিনি মানুষের উপাসনা চেয়েছিলেন, আজ সেটি নোংরা আবর্জনার ভাগাড় ছাড়া আর কিছু নয়।

 

এই ঘটনাই প্রমাণ করে, আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে কারও শক্তি টেকসই নয়। ধর্মীয় বিশ্বাস কখনো বলপ্রয়োগে পরিবর্তন করা যায় না। আব্রাহা যত বড় স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন, তা মানুষের হৃদয় জয় করতে পারেনি। কারণ মক্কার কাবা আল্লাহর ঘর, যার প্রতি মানুষের ভালোবাসা চিরন্তন। আজও কোটি কোটি মুসলমান কাবাকে ঘিরে হজ ও উমরাহ আদায় করে। অথচ আব্রাহার তথাকথিত কাবা কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়ে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ইতিহাসের এ পরিণতি মানুষকে শিখিয়ে দেয়, আল্লাহর ঘর কখনো বিকল্প হয় না। সূত্র: ইসলামিক ইনফরমেশন অবলম্বনে

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন