আফগানিস্তানের কট্টরপন্থী তালিবান নেতারা বৃহস্পতিবার তাদের দেশের ওপর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) এখতিয়ার প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা ২০০৩ সালে তাদের পূর্বসূরিদের হেগ-ভিত্তিক আদালতের প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তিতে যোগদানের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ বলে ঘোষণা করেন।
বর্তমানে ইসলামিক আমিরাত হিসেবে শাসন করা তালিবান তাদের ইসলামি আইনের কঠোর ব্যাখ্যা আরোপ করেছে দেশটিতে। এটি শরিয়া আইন নামে পরিচিত। এর অধীনে বাকস্বাধীনতা এবং শিক্ষায় নারীর অধিকার ও সরকারি কার্যক্রমে নারীর ভূমিকার ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
আফগান নারী ও বালিকাদের প্রতি কঠোর আচরণের কারণে কোনো দেশই তালিবানকে বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।.
তালিবান ইংরেজি ভাষার একটি ঘোষণায় বলেছে, “ইসলামি শরিয়া কাঠামোর মধ্যে আফগান জনগণের ধর্মীয় ও জাতীয় মূল্যবোধকে সমর্থন করে এমন একটি সত্তা হিসেবে আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত রোম সংবিধি বা ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত’ হিসেবে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের কোনো বাধ্যবাধকতা স্বীকার করে না।”
এতে আইসিসির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব এবং ‘দখলদার বাহিনী ও তাদের মিত্রদের দ্বারা আফগানিস্তানে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে কোনো বাস্তব ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাবুলে ওয়াশিংটন-সমর্থিত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে রোম সংবিধিতে যোগদানের দলিল জমা দেয়। রোম সংবিধি দ্বারা আইসিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তৎকালীন সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে আইসিসি ওই অঞ্চলে বা আফগান নাগরিকদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার পায়।
আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান গত ২৩ জানুয়ারি এক ঘোষণায় বলেন, পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে আখুন্দজাদা ও তালিবানের প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আইসিসি-র দায়িত্ব যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো বিশ্বের জঘন্যতম অপরাধের বিষয়ে রায় প্রদান। এই আদালতের কোনো পুলিশ বাহিনী নেই। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য এই আদালত ১২৫টি সদস্য রাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে।