হজরত আবু মুসা আল আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে তার উদাহরণ হলো লেবুর মতো। তার স্বাদও ভালো আবার ঘ্রাণও ভালো। মুমিনের উদাহরণ হলো খেজুরের মতো, তার স্বাদ ভালো কিন্তু কোনো ঘ্রাণ নেই, আর কোরআন তেলাওয়াতকারী পাপী ব্যক্তির উদাহরণ হলো ফুলের মতো, ঘ্রাণ ভালো কিন্তু স্বাদ তিক্ত। কোরআন তেলাওয়াত করে না এমন হাফেজের উদাহরণ হলো মাকাল ফলের মতো যার স্বাদ তিক্ত এবং সুগন্ধ নেই।’ (বুখারি ৭৫৬০)
আল্লাহর সঙ্গে কথা বলার মাধ্যম কোরআন তেলাওয়াত। হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘আমার যখন মন চাইত আল্লাহর সঙ্গে কথা বলব, তখন কোরআন তেলাওয়াত শুরু করে দিতাম।’
কোরআন তেলাওয়াতের সময় যদি কোথাও আজান দেয়া শুরু হয় তাহলে তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের জবাব দিতে হবে নাকি তেলাওয়াত চালু রাখতে পারবে?
আরও পড়ুন: যে ৩ আমলে হায়াত বাড়ে
হাদিসে আজানের জবাব দেয়ার বিষয়ে অনেক সওয়াবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রসুল, মুয়াজ্জিনদের মর্যাদা যে আমাদের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। তখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমিও তা-ই বল, মুয়াজ্জিন যা বলে। তারপর আজান শেষ হলে (আল্লাহর কাছে) চাও। (তখন) যা চাইবে তা-ই দেয়া হবে।’ (আবু দাউদ, মেশকাত)
তাই সাধারণ অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াতের সময় আজান শুনলে তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের উত্তর দেয়া উত্তম। কারণ সওয়াব লাভের জন্যই কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, তাই সাময়িক সময়ের জন্য তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের জবাব দেয়া উত্তম। আজানের পরে আরো কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে তবে অল্প সময়ের জন্য তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের জবাব দিলে এতে তেলাওয়াত ও আজানের জবাব উভয়টিরই সওয়াব পাওয়া যাবে।
আজানের সময় যারা কোরআন শেখা বা শেখানোর কাজে ব্যস্ত থাকে তারা আজান শোনার পরেও পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে পারবে। এ অবস্থায় তাদের জন্য তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের উত্তর না দেয়ারও অবকাশ রয়েছে। (আসসিআয়াহ ২/৫১; রদ্দুল মুহতার ১/৩৯৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২৫৯)
]]>