অনেকেই উদ্বেগ, অবসাদ, অনিয়ন্ত্রিত হৃদস্পন্দনের সমস্যায় ভুগছেন। এটি পারিপার্শ্বিক অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে যেমন হতে পারে তেমনি শরীরে কোনো খনিজ, ম্যাগনেশিয়াম কিংবা ভিটামিনের অভাবেও হতে পারে।
অ্যারিথমিয়া
সাধারণত, হৃদস্পন্দন প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার নিয়মিতভাবে স্পন্দিত হয়। এর ব্যতিক্রম ঘটলেই চিকিৎসা শাস্ত্রে একে বলে ‘অ্যারিথমিয়া’।
কেন হয়?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস এর গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা বলছেন, যদি প্রতি মিনিটে ৬০ টিরও কম হৃদস্পন্দন নির্দেশ হয় তবে একে চিৎিসার ভাষায় ব্র্যাডিকার্ডিয়া এবং প্রতি মিনিটে ১০০ টিরও বেশি হৃদস্পন্দন হলে একে টাকাইকার্ডিয়া বলা হয়।
গবেষকরা বলছেন, হৃদস্পন্দনের দুটি শক্তিশালী প্রকোষ্ঠ রয়েছে। হৃদযন্ত্রের দুটি উপরের প্রকোষ্ঠকে বলা হয় অ্যাট্রিয়া এবং দুটি নিচের প্রকোষ্ঠকে বলা হয় ভেন্ট্রিকল। এর কার্যক্রমে একটির সঙ্গে অন্যটির ছন্দ পতন হলেই অনিয়মিত স্পন্দনে বা ‘অ্যারিথমিয়া’ সমস্যা দেখা দেয়।
‘অ্যারিথমিয়া’ রোগের কারণের মধ্যে রয়েছে-
১। হার্ট ব্লক
২। উচ্চ রক্তচাপ
৩। থাইরয়েড সমস্যা
৪। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
৫। মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
৬। অতিরিক্ত ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও ধূমপান
৭। ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা
৮। ফুসফুসের রোগ
৯। সাইনাস নোডের কর্মহীনতা
১০। শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের অভাব ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: চিনি না লবণ: কোনটি হৃদযন্ত্রে বেশি প্রভাব ফেলে?
লক্ষণ
এ রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে যেসব উপসর্গ বা লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে সেগুলো হলো-
১। দ্রুত বা ধীর হৃদস্পন্দন
২। হৃদস্পন্দন লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে এমন অনুভূতি
৩। মাথা ঘোরা বা হালকা লাগা
৪। বুকে ব্যথা
৫। শ্বাসকষ্ট
৬। ঘাম
৭। বুক ধড়ফড় করা
আরও পড়ুন: হৃদযন্ত্রে সমস্যা কি না, সংকেত দেবে আঙ্গুল
পরীক্ষা
ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (EKG) নামের একটি পরীক্ষা থেকে অ্যারিথমিয়া রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করা যায়।
করণীয়
‘অ্যারিথমিয়া’ একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে, তাই এর লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। রোগটি থেকে মুক্তি পেতে ও ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
]]>