আগামী ২০ জুন হেডিংলি টেস্ট দিয়ে শুরু হবে ইংল্যান্ড-ভারত পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। এই সিরিজ দিয়েই ভারতের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হবে শুভমান গিলের। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির আকস্মিক বিদায়ের ফলে ভারতীয় দলের ব্যাটিং অর্ডারে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণে ডাক পেয়েছেন করুণ নায়ার ও সাই সুদর্শন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভালো খেলার পুরস্কার পেলেন এই দুজন। রঞ্জিতে সবশেষ মৌসুমে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী করুণ। অন্যদিকে ২৩ বছর বয়সী সুদর্শন চলমান আইপিএলে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
তবে সব ছাপিয়ে আলোচনায় সরফরাজ খানের বাদ পড়ার বিষয়টি। ভারতের সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে স্কোয়াডে থাকলেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ না পাওয়া সরফরাজ বাদ পড়েছেন টেস্ট দল থেকে। ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন এই ২৭ বছর বয়সী। কিন্তু পরের দুই টেস্টে আর রান পাননি। এরপর বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে তাকে আর কোনো ম্যাচেই সুযোগ দেয়নি ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট। তার এভাবে বাদ পড়া নিয়ে হতাশ ভারতের কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার।\
ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে দিনের পর দিন ভালো পারফরম্যান্স করেও উপেক্ষিত থেকেছেন সরফরাজ। অবশেষে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুযোগ মেলার পর এখন পর্যন্ত ৬ টেস্ট খেলে ৩৭.১০ গড়ে ৩৭১ রান করেছেন। আসন্ন ইংল্যান্ড সফরে জায়গা পেতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন তিনি। নির্বাচকদের দৃষ্টি কাড়তে কমিয়েছেন ১০ কেজি ওজন। তবে এতকিছুর পরও অজিত আগারকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেল তাকে উপেক্ষা করেছে।
আরও পড়ুন: গিল অধিনায়ক হওয়ায় গ্রামের বাড়িতে তার দাদার মিষ্টি বিতরণ
সরফরাজের বাদ পড়া নিয়ে সুনীল গাভাস্কার ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, 'এটা কঠিন, ক্রিকেটটা আসলে এমনই। যখন আপনি সুযোগ পাবেন, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে জায়গাটা আপনার প্রাপ্য। এমনকি আপনি যদি শতক হাঁকান, আপনাকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনি আগের ইনিংসেই শতক হাঁকিয়েছেন সেটা আপনার মাথায় আর নেই। আপনাকে নজর খেলায় রাখতে হবে এবং আবার সেই রানগুলো করতে হবে। আপনি কোনোভাবেই আরেকজনকে সুযোগ দেবেন না আপনাকে ঠেলে বের করে দিতে।'
এ ক্ষেত্রে করুণ নায়ারকে দেখে সরফরাজকে অনুপ্রেরণা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গাভাস্কার। নায়ার ২০১৬ সালের নভেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পর আর দলে জায়গা পাননি। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর পর ফের জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। সরফরাজকেও নিজের জায়গা পাকা করার উপায়টা দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি।

গাভাস্কার বলেন, 'জায়গা পাকা করার পুরো ব্যাপারটাই আপনার নিজের ওপর নির্ভর করে। আপনাকে দরজায় কড়া নেড়ে যেতেই হবে এবং দরজা ভেঙেই ঢুকতে হবে।'
আরও পড়ুন: পিএসএলের ফাইনালে রাতে মাঠে নামছে সাকিব-রিশাদরা
সরফরাজকে বাদ দেয়াটা নির্বাচকদের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল বলে মনে করেন গাভাস্কার। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর ইনজুরির কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে সেভাবে সুযোগ হয়নি তার। এখানেই এই ২৭ বছর বয়সী পিছিয়ে পড়েছেন বলে মনে করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ হারের দায় তার কাঁধে চাপানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন গাভাস্কার।
তিনি বলেন, 'আমার মনে হয় অস্ট্রেলিয়া সফরের পর এটা খুব কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল, লাল বলে কোনো খেলা ছিল না। হ্যাঁ, রঞ্জি ট্রফি ছিল, কিন্তু সে চোট পেয়েছিল। তাই খেলতে পারেনি। তার ফর্ম দেখানোর কোনো সুযোগই ছিল না।'
আপনাকে এমন হয়ে উঠতে হবে যেন বাদ দেয়া সম্ভব না হয়। আমরা অতীতে দেখেছি, যদি কোনো দল সিরিজ হারে, স্কোয়াডে যারা ১৩, ১৪, ১৫ নম্বরে থাকে তাদেরই বাদ দেয়া হয়। আপনাকে আপনার সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।'–গাভাস্কার যোগ করেন।
]]>