অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক মাধ্যম শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা অনেকের সমর্থন পাচ্ছে

৫ দিন আগে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষতি থেকে আপনি শিশুদের মুক্ত রাখবেন কীভাবে? রাজনৈতিকভাবে অস্ট্রেলিয়ায় এর উত্তর সহজ, তবে কার্যত সমাধান অনেকটা কঠিন ও জটিল হয়ে উঠতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার পরিকল্পনা করেছে, ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের এক্স, টিকটক, ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম-সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে; এই পরিকল্পনা রাজনৈতিকভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বিরোধী দলও বলেছে, সরকার যদি না দ্রুত পদক্ষেপ নিত তাহলে কয়েক মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলা নির্বাচনে বিজয় লাভের পর তারাও একই কাজ করত। অস্ট্রেলিয়ার আটটি প্রদেশ ও মূল ভূখণ্ডের নেতারা সবাই এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন। যদিও ক্ষুদ্রতম রাজ্য তাসমানিয়ার দাবি, বয়সের সীমা ১৪-তে নামিয়ে আনা হোক। তবে, প্রযুক্তি ও শিশু কল্যাণ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরব হয়েছেন। ১৪০ জনের বেশি এমন বিশেষজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজকে লেখা খোলা চিঠিতে ১৬ বছরের বয়স-সীমাকে নিন্দা জানিয়েছেন। তাদের মতে, এটা “ঝুঁকিকে কার্যকরীভাবে সমাধান করার ক্ষেত্রে এটা অতি স্থুল একটা হাতিয়ার।” কী প্রস্তাব করা হয়েছে এবং কীভাবে তা বাস্তবায়িত হবে সে বিষয়ে বিশদে বলা হয়নি। আগামী সপ্তাহে সংসদে এই আইন চালু হলে বিস্তারিত জানা যাবে। লিও পাগলিসি, মেলবোর্নের ১৭ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। তিনি মাত্র ১১ বছর বয়সে অনলাইন স্ট্রিমিং পরিষেবা ‘৬ নিউজ অস্ট্রেলিয়া’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ডিজিটাল যুগে বেড়ে ওঠার ফলে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে যে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে তার অভাব রয়েছে এই আইনপ্রণেতাদের, অথচ তারাই এমন নিষেধাজ্ঞা চাপাচ্ছেন। লিও বলেন, “সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে বেড়ে ওঠেননি, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে বড় হচ্ছেন না এবং প্রচুর মানুষ যেটা বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছেন তা হল, পছন্দ হোক আর না হোক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে।” সরকারের প্রস্তাবের অন্যতম সমর্থক সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রচারক সোনিয়া রায়ান। ব্যক্তিগত ট্রাজেডি থেকে তিনি জানেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম শিশুদের জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এক প্রদেশে তার ১৫ বছর বয়সী মেয়ে কারলি রায়ানকে ২০০৭ সালে হত্যা করে ৫০ বছর বয়সী এক শিশুকামী (পেডোফাইল)। অনলাইনে আততায়ী নিজেকে কিশোর বলে পরিচয় দিয়েছিল। ডিজিটাল যুগের নির্মম ও নৃশংস এই মাইলফলকে লেখা রয়েছে কারলির নাম। তিনিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ব্যক্তি যিনি অনলাইন শিকারীর হাতে প্রাণ দিয়েছেন। কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনেটবিদ্যার অধ্যাপক টমা লিভারের আশঙ্কা, সরকার উল্টে প্ল্যাটফর্মগুলিকে ব্যবহারকারীদের পরিচয় বা শনাক্তকরণের তথ্য ধারণে সুবিধা করে দেবে। সরকার ইতোমধ্যে বলেছে, প্রত্যেকের নির্ধারিত বয়স-সীমা পূরণ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব শিশু বা তার অভিভাবকের নয়, বরং এই দায়িত্ব থাকবে প্ল্যাটফর্মগুলির উপর।
সম্পূর্ণ পড়ুন