বুধবার বেলা ১২টায় নগরীর কাদিরগঞ্জে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত করা হয় হিটলার মাহমুদ (৩৬) নামে এক যুবলীগকর্মীকে। তিনি জেলার বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামে বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ছাত্রী রাজশাহীর একটি সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই কলেজছাত্রী জানান, ২০২০ সালের মে মাসে হিটলার তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর বাগমারার ভবানীগঞ্জ তক্তপাড়ায় তার এক বোনের বাসায় এবং রাজশাহী নগরের লক্ষ্মীপুর ঝাউতলা মোড়ের এক বাসায় নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক মেলামেশা করেন। কিন্তু বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি প্রতিবারই এড়িয়ে যেতেন।
আরও পড়ুন: মাকে বেঁধে তরুণীকে ধর্ষণ, গ্রেফতার ২
তাই ওই ছাত্রী বিয়ের দাবিতে একবার হিটলারের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। তখন তার বাবা এই বলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন যে, কিছুদিনের মধ্যে তাকে বিয়ে দিয়ে আনা হবে। এভাবে বিয়ে করালে তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন হবে। কিন্তু পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি।
ওই ছাত্রী জানান, প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি হিটলারকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। তখন হিটলার তাকে গোপনে ধারণ করা কিছু আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও পাঠান। তার কথামত না চললে এগুলো ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখান। ফলে তিনি সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ওই ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে হিটলার দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন বলে তার অভিযোগ।
তিনি জানান, হিটলারের বিরুদ্ধে মামলা করতে তিনি গত ২০ নভেম্বর বাগমারা থানায় যান। সেদিন ওসি তৌহিদুল ইসলাম শুধু একটি অভিযোগ নিয়ে রাখেন। এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে তিনি মামলা রেকর্ড করেননি। পরে ২৮ নভেম্বর তিনি আদালতে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার আবেদন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন। গত ২৮ নভেম্বর তিনি আদালতে মামলা করলে বিচারক পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বিয়ে বাড়িতে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ, ধর্ষণের পর শিশু হত্যায় গ্রেফতার ৩
ওই ছাত্রীর দাবি, হিটলার যুবলীগকর্মী হলেও তার মামা ও চাচা বিএনপির নেতা। এখন মামলা করলেও সুবিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তারা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘মামলা করার পরেও এ পর্যন্ত কোনো তদন্ত কর্মকর্তা আমার সঙ্গে কথা বলেননি। এভিডেন্সও চাননি।’
ছাত্রীর দাবি, এক মাস পার হলেও তিনি তদন্তের অগ্রগতি জানতে পারছেন না। পিবিআই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার কার্যক্রম তরান্বিত করবে এটা তার চাওয়া।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের পর ইউপি সদস্যের মুখে বিষ ঢেলে হত্যা!
ওই ছাত্রী বলেন, ‘মামলা করার পর আমি জেনেছি হিটলার ইতোমধ্যে তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর নাম রিতা। তারপর রাজিয়া সুলতানা ইভা নামে এক মেয়ের সঙ্গে চার বছর প্রেম করে বিয়ে করেন। পরে তালাক হয়ে যায়। বর্তমানে মিতু নামে আরেক মেয়ের সঙ্গে হিটলারের প্রেমের সম্পর্ক আছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষকের সঙ্গেও তার প্রেমের সম্পর্ক আছে। নারীলোভী হিটলার মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে টাকা-পয়সাও হাতিয়ে নেন। আমি চাই, আর কেউ যেন হিটলারের ফাঁদে না পড়েন।’
অভিযুক্ত যুবলীগকর্মী হিটলার মাহমুদ বলেন, ‘প্রেম তো স্বাভাবিক ঘটনা, প্রেম হতেই পারে। কিন্তু ওই মেয়ে ভালো না। বিয়ে করতে চাইলে বিয়ে করে না। ১০ লাখ, ২০ লাখ টাকা চায়। সে যেসব অভিযোগ এনেছে সেগুলো সত্য নয়। সে মামলা করেছে সেটা আমরা আইনগতভাবেই মোকাবিলা করব।’