কাঠের তৈরি ট্রলারে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন লোহার উপকরণ যুক্ত করে সমুদ্রে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে মাছ আহরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে ট্রলিং বোট। নিষিদ্ধ এই নৌযান সমুদ্রে মাছ আহরণে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ট্রলিং বোর্ড দিয়ে ৪০ মিটার গভীরতার বেশি পানিতে মাছ শিকারের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সক্ষমতা না থাকায় অবৈধ ট্রলিং বোট ৫ থেকে ১০ মিটার গভীরতায় গিয়ে মাছ আহরণ করছে। ছোট ফাঁসের জালে মারা পড়ছে সব আকৃতির মাছ। ধ্বংস হচ্ছে সমুদ্রে মাছের আবাসস্থল।
আরও পড়ুন: জেলেদের জন্য ‘লাইফলাইন’ হতে পারে স্টারলিংক ইন্টারনেট
জেলেরা বলেন, ছোট ছোট মাছ মারা যাচ্ছে ট্রলিং বোটের কারণে। এতে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না সাগরে। ফলে সাগর থেকে প্রায় সময়ই খালি হাতে ফিরতে হয়।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ট্রলিং বোট চলমান থাকলে হুমকির মুখে পড়বে মৎস্যখাত। বিপাকে পড়বেন জেলেরা।
গবেষকরা জানান, অবৈধ ট্রলিং বোটের দৌরাত্ম্যের কারণে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র। তাই সমুদ্রে কমেছে মাছের প্রজনন, উৎপাদন ও আহরণ।
মৎস্য গবেষক বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, যেখানে মাছ ডিম ছাড়ে, খাবার খায় ও বসবাস করে সেগুলো ধ্বংস করছে বিপ্লব ট্রলিং বোটগুলো। এতে মাছের প্রজননে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধে সোচ্চার রয়েছেন তারা। বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন বলেন, কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তাদের সঙ্গে মিলে ট্রলিং বোট বন্ধে কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পাথরঘাটায় কোস্টগার্ডের স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের দক্ষিণ জোনের স্টাফ অফিসার (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রিফাত আহমেদ বলেন, ট্রলিং বোট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার জন্য কোস্টগার্ডের অভিযান চলমান রয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে।
এর আগে গত ১৭ জুন পাথরঘাটায় দুইটি অবৈধ ট্রলিং বোট জব্দ করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দলবল নিয়ে মালিকপক্ষের লোকজন হামলা চালায় কোস্টগার্ডের ওপর। ভাঙচুর করা হয় কোস্টগার্ডের গাড়ি। এ ঘটনার মামলায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
]]>