সোমবার (৩০ জুন) ভোররাতে যৌথবাহিনীর টহল দল জেলার ভাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম আলগী এলাকার একটি পরিত্যক্ত খড়ের ঘরে অভিযান চালিয়ে অপহৃত শেখ জামালকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণকারী শফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়।
অপহরণকারী শফিকুল ইসলাম মাতুব্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম আলগী গ্রামের মনতাজ মাতুব্বরের ছেলে এবং অপহৃত শেখ জামাল শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার বাগকুচি গ্রামের বাসিন্দা। তারা দুজনই এক সময় বিদেশে থাকতেন। বিদেশ থেকে ফিরে শেখ জামাল ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি শুরু করেন।
জানা যায়, রোববার বিকেলে ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে শেখ জামালকে অপহরণ করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়। অপহরণকারীরা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণের শিকার শেখ জামালকে মারধর করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি ফরিদপুর সেনাবাহিনী ক্যাম্পে অপহৃতের স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৩২) অভিযোগ করেন।
পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা তথ্য ও স্থানীয় সূত্রের ভিত্তিতে ভাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম আলগী এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি পরিত্যক্ত খড়ের ঘর থেকে অপহৃত শেখ জামালকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়। আটক শফিকুল ইসলামকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: র্যাব পরিচয়ে অপহরণ: এখনও অধরা চক্রের প্রধান ‘নবি-শাহ আলম’
ভাঙ্গা থানা সূত্রে জানা যায়, শেখ জামাল বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে ঢাকায় আত্মগোপনে চলে যান। প্রতারিত হয়ে শফিকুল ইসলাম আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে অপহরণের পরিকল্পনা করেন এবং ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে জামালকে অপহরণ করে ভাঙ্গার আলগী এলাকায় আটকিয়ে রেখে শেখ জামালের পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
পরে শেখ জামালের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে জামালকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে অপহরণকারী শফিকুল ইসলামকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় শেখ জামাল বাদি হয়ে শফিকুলের নামে মামলা করেছেন। গ্রেফতার শফিকুলকে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রজিৎ মল্লিক জানান, অপহরণকারী শফিকুল ও অপহরণের শিকার জামালউদ্দিনের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার টাকা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এক পর্যায়ে বিদেশ যাওয়ার টাকা নিয়ে জামালকে অপহরণ করে আটকিয়ে রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে।