অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস, রাজনৈতিক দলের কী প্রতিক্রিয়া?

৭ ঘন্টা আগে
অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাসের কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতিকে সরকারের সফলতা হিসেবে দেখছে জামায়াত। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আর মব সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারা সরকারের ব্যর্থতা উল্লেখ করে বিএনপি বলছে, নির্বাচনে বেশি দেরি হলে অকল্যাণ হবে দেশের জন্য। তবে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের সময় ফুরিয়ে যায়নি বলে মনে করে নাগরিক কমিটি।

ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস পূর্ণ হলো। এই সময়ে ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আর নানা মহলের অন্তত ১৩৬টি আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর লাগাতার নির্বাচনের দাবিও চাপে ফেলেছে অন্তর্বর্তী সরকারকে।

 

সরকারের ৬ মাসের পুরোটা সময়ই আলোচনায় ছিল সংস্কার ইস্যু। এখন পর্যন্ত ৬ সংস্কার কমিশন জমা দিয়েছে প্রস্তাবনা। তবে একইসঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের বিক্ষোভ এবং শহীদ পরিবারের নানা অভিযোগে বিপাকে পড়তে হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারকে।

 

এসবের মধ্যেও সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতিকে সরকারের বড় সফলতা হিসেবে দেখছে জামায়াতে ইসলামী। তবে আহত এবং শহীদ পরিবারের জন্য সরকারের নেয়া উদ্যোগ নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে দলটির।

 

আরও পড়ুন: জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

 

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সময় সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নানা ক্ষেত্রে রাজনৈতিক গুণগত পরিবর্তন দরকার। সেটাকে স্ট্রিমলাইন করার জন্য কমিশনগুলো করা হয়েছে এবং বেশ কিছু প্রস্তাবনা এসেছে। আমি মনে করি, সরকারের এটা একটা বড় সফলতা। তবে ব্যর্থতার একটা বড় দিক হচ্ছে, যাদের রক্ত ও জীবন দিয়ে বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে, তাদেরকে গুরুত্ব দিয়ে যে পরিমাণ সমস্যার সমাধান করার কথা ছিল, সেক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করি।  

 

এদিকে, গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের মাত্রায় খুশি নয় বিএনপি। জনদুর্ভোগ এবং বেহাল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করছে দলটি। এসব সমস্যার সমাধানে নির্বাচনমুখী সংস্কার শেষে দ্রুত ভোট আয়োজনের তাগিদ দলটির এই স্থায়ী কমিটির সদস্যের।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি দৃশ্যমান হচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্য অনুসরণ করলে দেখা যায়, এই সরকারের মেয়াদকে তারা কোনো না কোনোভাবে দীর্ঘায়িত করতে চান। কিন্তু সেটা বাংলাদেশের জন্য, মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে বলে আমরা মনে করি না।  

 

আরও পড়ুন: দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপির বিবৃতি

 

তবে গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া নাগরিকদের সংগঠন নাগরিক কমিটি বলছে, বিদ্যমান কাঠামো ভাঙতে না পারায় পুরোপুরি সফলতা পায়নি সরকার। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর অসহযোগিতাকেও দায়ী করছেন সংগঠনটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।

 

তিনি বলেন, যে ধরনের নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ অভ্যস্ত হয়েছিল, অবৈধ নির্বাচনের যে কাঠামো ছিল-- সেটাকে বহাল রেখেই নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। সংস্কারের কথা জোর দিয়ে বলা হচ্ছে না। তাই এ ধরনের নির্বাচন বাংলাদেশকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দেবে বলে আমরা মনে করছি।

 

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন